লালমনিরহাটে কৃষকেরা আগাম জাতের আলু চাষ করে বাজারে ভালো দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছেন। জেলার বিভিন্ন বাজারে ইতিমধ্যেই আগাম জাতের নতুন আলু উঠতে শুরু করেছে। এবার আগাম জাতের আলুর দাম গতবারের তুলনায় বেশ ভালো, তাতে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকায়। পাইকারি ব্যবসায়ীরা কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি কেজি আলু ৫০ থেকে ৫২টাকায় কিনে এনে খুচরা বাজারে ব্যাবসায়ীদের কাছে প্রতি কেজি আলু বিক্রি করছেন ৫৫-৫৭ টাকায়।খুচরা ব্যাবসায়ীরা ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রি করছেন প্রতি কেজি আলু ৬০-৬৫টাকায়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্র মতে, আগাম আলু সহ চলতি মৌসুমে লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলায় ৬হাজার ৫০০হেক্টর জমিতে আলুর চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগাম জাতের আলু হেক্টর প্রতি ১৭মেট্রিক টন এবং মৌসুমী আলুর প্রতি হেক্টর জমিতে ২৮.৫ থেকে ২৯টন উৎপাদনের প্রত্যাশা করছে কৃষি বিভাগ।
পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের চকচকার পাড়া এলাকার কৃষক সাইদুল ইসলাম (৫৫) জানান, আগাম জাতের আলু চাষ করে ভালো দাম পেয়েছি। ৫০টাকা কেজি দরে পাইকারদের কাছ থেকে জমিতেই বিক্রি করেছি। তাছাড়া ৬০-৬৫দিনের মধ্যে এই আলু ক্ষেত থেকে তোলা যায়। আগাম ভালো দাম পেয়ে আমাদের মত কৃষকদের আলু চাষের আগ্রহ দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে।
কৃষক জাহিদ হাসান (৪০) বলেন, প্রতিবিঘা (৩৩শতাংশ) জমিতে আগাম জাতের আলু ২২-২৫ বস্তা হয়ে থাকে যা পরিমাণে ৩৫-৩৭ মণ পর্যন্ত। এছাড়াও মৌসুমের শুরুতেই বাজারে আসায় এই আলুর চাহিদা থাকে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৬০টাকা পর্যন্ত।
পাইকার মজিদুল ইসলাম (৪২) বলেন, আমাদের কৃষকদের ক্ষেত থেকে আলু কিনতে হয় পাল্লা প্রতি (৫ কেজি) ২৪০-২৫০ টাকায়। সেই আলু আবার বাজার নিয়ে এসে খুচরা দোকানদারদের কাছে কেরিং খরচ সহ পাল্লা প্রতি বিক্রি করতে হচ্ছে ২৭০-২৮০ টাকায়।
তিনি আরও বলেন, কিছুদিনের মধ্যে মৌসুমী আলু বাজারে চলে আসলে আলুর দাম আরো কমে আসবে।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মোঃ সাইখুল আরিফিন জানান, আগাম আলু চাষের জন্য এ উপজেলার জমি ও আবহাওয়া উপযোগী হওয়ায় আগাম ধান কর্তনের পর এখানকার কৃষকেরা এক খন্ড জমিও ফেলে রাখে না। এ ছাড়া বছরের পর বছর যে জমিগুলো পতিত থাকতো গত কয়েক বছর থেকে সে জমিগুলোতে আগাম জাতের আলু চাষ করে ইতিমধ্যে বিপ্লব ঘটিয়েছে এখানকার কৃষকেরা।